ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (সংক্ষেপে ঢাবি) বাংলাদেশের একটি স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়। এটি দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। তাই, অনেক ছাত্রছাত্রীর স্বপ্নের ঠিকানা এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ব্রিটিশ ভারতে ১৯২১ সালে যাত্রা শুরু করে এ বিশ্ববিদ্যালয়। সূচনালগ্নে বিশ্বখ্যাত অনেক বিজ্ঞানীর দ্বারা কঠোরভাবে মান নিয়ন্ত্রিত হবার কারণে এটি সেসময় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে স্বীকৃতি পায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর একটি বিশেষত্ব হলো বাংলাদেশ স্বাধীন করতে এর অনেক অবদান ছিলো, যা পৃথিবীর ইতিহাসে অনন্য।
বিষয়সূচি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ও পরিচিতি
ঢাকার শাহাবাগ এলাকায় অবস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালের ১ জুলাই ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ঢাকার সবচেয়ে অভিজাত ও সৌন্দর্যময় রমনা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমির উপর গড়ে উঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তিনটি অনুষদ ও বারোটি বিভাগ নিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়। প্রথমে ৮৭৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং ভারতবিভক্তির ফলে অগ্রগতির কিছুটা ব্যাহত হয়। তখন পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকার প্রদেশর একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে এ দেশের মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা উজ্জীবিত হয়। নতুন উদ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকাণ্ড শুরু হয়। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩ টি অনুষদ, ৮৪ টি বিভাগ, ১২ টি ইনস্টিটিউট এবং ৫৬ টি গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অনুষদ ও আসন বিশিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় এটি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন পড়ব?
সেই শুরু থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ দেশের মানুষের কাছে অনেক আকাঙ্ক্ষিত। যেখানে একটা রাষ্ট্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সৃষ্টি করেছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ সহ আজ পর্যন্ত প্রতিটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি ও বিখ্যাত রাজনীতিবিদ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন। সেই ব্যক্তিরা আজও আমাদের কাছে আদর্শ ব্যক্তি হিসাবে রয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশের স্থপতি এবং বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। সৈয়দ নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি। তাজউদ্দীন আহমেদ, বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। এম এ ওয়াজেদ মিয়া, বাংলাদেশের বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী। ড.মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী। হুমায়ূন আহমেদ, কথাসাহিত্যিক। ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, পদার্থবিদ। এমন আরও অনেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী ছিলেন যারা বর্তমানে অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি হয়েছেন তাদের কাজের মাধ্যমে। বিখ্যাত শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন সত্যেন্দ্রনাথ বসু, বিশ্ব বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী। ড. এম শমশের আলী, পরমাণু বিজ্ঞানী। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, সংস্কৃতি ও বাংলা ভাষার গবেষক। ড. মুনির চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী এরকম অনেক মহান ব্যক্তিত্ব শিক্ষকতা করেছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি ছাত্রছাত্রীর কাছে ওনারা আদর্শ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ও বিভাগ সমূহ
১. বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- পদার্থ বিজ্ঞান
- গনিত
- রসায়ন
- পরিসংখ্যান ও তথ্য পরিসংখ্যান
- ফলিত গনিত
- তাত্ত্বিক পদার্থবজ্ঞান
- জৈবরাসায়নিক পদার্থবিদ্যা ও প্রযুক্তি
২. জীববিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ
- উদ্ভিদ বিজ্ঞান
- প্রাণি বিজ্ঞান
- প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান
- মনোবিজ্ঞান
- অনুজীব বিজ্ঞান
- মৎসবিজ্ঞান
- জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি
- চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান
- মনোবিজ্ঞান শিক্ষা
৩. ফার্মেসি অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- ফার্মেসি
- ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি অ্যান্ড ফার্মাকোলজি
- ফার্মাসিউটিক্যাল প্রযুক্তি
৪. আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সস অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- ভূগোল ও পরিবেশ
- ভূতত্ত্ব
- সমুদ্র বিজ্ঞান
- দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা
৫. প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
- ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং
- ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল
- কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং)
- নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং
- রোবটিক্স এন্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং
৬. কলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- বাংলা
- ইংরেজী
- আরবি
- ফারসি ভাষা ও সাহিত্য
- উর্দু
- সংকৃত
- পালি ও বৌদ্ধ শিক্ষা এবং সংস্কৃতি
- ইতিহাস
- দর্শন
- ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি
- ইসলামি স্টাডিজ
- তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা
- ভাষাবিজ্ঞান * নাট্য কলা ও সংগীত
- বিশ্ব ধর্মতত্ত্ব
- ভাষাবিজ্ঞান
৭. সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- অর্থনীতি
- রাষ্ট্রবিজ্ঞান
- নৃবিজ্ঞান
- গনযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা
- সমাজবিজ্ঞান
- লোক-প্রশাসন
- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক
- শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন
- নারী ও লিঙ্গ শিক্ষা
- উন্নয়ন শিক্ষা
- জনসংখ্যা বিজ্ঞান
- টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র
- অপরাধবিজ্ঞান
- যোগাযোগ বৈকল্য
৮. আইন অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- আইন
৯. ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- ব্যবস্থাপনা ও তথ্য ব্যবস্থা (ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম)
- হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা (অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম)
- বিপণন (মার্কেটিং)
- ফিন্যান্স
- ব্যাংকিং ও ইন্সুরেন্স
- আন্তর্জাতিক ব্যবসা (ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস)
- ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট
- অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি ও লিডারশীপ
১০. চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- অংকন ও চিত্রায়ন
- গ্রাফিক্স ডিজাইন
- প্রিন্ট মেকিং
- প্রাচ্যকলা
- ভাস্কর্য
- কারুশিল্প
- মৃৎশিল্প
- শিল্পকলার ইতিহাস
১১. চিকিৎসা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১২. স্নাতকোত্তর চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১৩. শিক্ষা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ও বিভাগ সমূহ
১. তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং
২. পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- ফলিত পরিসংখ্যান
৩. পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান
৪. লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং
- ফুটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং
- লেদার প্রোডাক্টস ইঞ্জিনিয়াররিং
৫. আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- ইংলিশ ফর স্পিকার অব আদার ল্যাঙ্গুয়েজেস (English for Speakers of Other Languages – ESOL)
- ফ্রেঞ্চ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার (French Language and Culture – FLC)
- চাইনিজ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার (Chinese Language and Culture – CLC)
- জাপানিজ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার (Japanese Language and Culture – JLC)
৬. শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- শিক্ষা
৭. সমাজকল্যান ও গবেষণা ও ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- সমাজকল্যান
৮. স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- স্বাস্থ্য অর্থনীতি
৯. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ভালনেরাবিলিটি শিক্ষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
১০. ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১১. শক্তি ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১২. কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব সুবিধা ও গবেষণা কেন্দ্র
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নত মানের ল্যাবরেটরি বা গবেষণাগার রয়েছে। প্রয়োজনীয় গবেষণা যন্ত্র ও প্রযুক্তির মাধ্যমে এখানে শিক্ষাদান করা হয়। এছাড়াও এখানে রয়েছে ৫২ টি গবেষণা কেন্দ্র ও ব্যুরো, যা কিনা বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেশি। এগুলো দেশের গবেষণা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে অনেক ভূমিকা রাখছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের থাকার জন্য ১৯ টি হল এবং ৫ টি হোস্টেল রয়েছে। প্রতিটি হলে রয়েছে আলাদা রিডিং রুম এর ব্যবস্থা, ডাইনিং রুম, ইনডোর খেলার ব্যবস্থা এবং ওয়াইফাই এর ব্যবস্থা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসমূহ
- ১. সলিমুল্লাহ মুসলিম হল
- ২. ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল
- ৩. জগন্নাথ হল
- ৪. ফজলুল হক মুসলিম হল
- ৫. শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হক হল
- ৬. রোকেয়া হল
- ৭. মাস্টারদা সূর্যসেন হল
- ৮. হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল
- ৯. সামসুন নাহার হল
- ১০. কবি জসীম উদ্দিন হল
- ১১. স্যার এ.এফ.রহমান হল
- ১২. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল
- ১৩. মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল
- ১৪. বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল
- ১৫. অমর একুশেহল
- ১৬. স্যার ফিলিপ হার্টগ আন্তর্জাতিক হল
- ১৭. বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল
- ১৮. বিজয় একাত্তর হল
- ১৯. কবি সুফিয়া কামাল হল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল সমূহ
- ১. শহীদ অ্যাথলেট সুলতানা কামাল হোস্টেল
- ২. আইবিএ হোস্টেল
- ৩. শাহনেওয়াজ ছাত্রাবাস
- ৪. ড. কুদরত-ই-খুদা হোস্টেল
- ৫. নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী ছাত্রী নিবাস
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সুবিধা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষক সম্পর্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী আর শিক্ষক এর মধ্যে অনেক ভালো সম্পর্ক থাকে। এখানের শিক্ষকরা খুবই বন্ধুসুলভ আচরণ। এছাড়াও বড় ভাই আপুরা অনেক হেল্পফুল হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ছয় লাখ আশি হাজারেরও অধিক বই আছে। এখানে বইয়ের পাশাপাশি দৈনিক সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন ও অন্যান্য জার্নাল আছে। পাশাপাশি অনুষদ ও ইনস্টিটিউট ভিত্তিক আলাদা আলাদা গ্রন্থাগার আছে। যার মধ্যে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ই-লাইব্রেরী অন্যতম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরপরিবহন ব্যবস্থা
অনাবাসিক ছাত্রছাত্রীদের জন্য ৩৪ টি বাস রয়েছে। যা বিভিন্ন রুটে সপ্তাহে ৫ দিন চলাচল করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র বা টিএসসি চারতলা ভবন বিশিষ্ট। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন সচল রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় সুলভ মূল্যে খাবার পাওয়া যায়। এটি টিএসসির পাশে অবস্থিত। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষদে আরও অনেকগুলি ক্যান্টিন আছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তন
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বৃহৎ আকারের একটি মিলনায়তন আছে। এটি টিএসসির পাশে অবস্থিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান বলে এর নীতি-নির্ধারণের জন্য রয়েছে একটি সিনেট ভবন। যার নাম নওয়াব আলী সিনেট ভবন। এটি অনেকটা জাতীয় সংসদ ভবনের মত হওয়ায় একে ‘মিনি সংসদ ভবন’ নামেও ডাকা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলাধুলা ও বিনোদন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলাধুলা করার জন্য একটি কেন্দ্রীয় মাঠ আছে। এছাড়াও প্রত্যেক হলে আলাদা মাঠ রয়েছে খেলাধুলার জন্য। বিনোদনের জন্য অনেক সাংস্কৃতিক সংঘ আছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা মান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বিজ্ঞান একাডেমি পুরষ্কার লাভ করেন। এশিয়াইউকের পক্ষ থেকে শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে জায়গা করে নেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন ৬৪ তম স্থানে রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস লাইফ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস লাইফ এক কথায় অসাধারণ। পড়াশুনা, খেলাধুলা আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিয়ে একটি পারফেক্ট ক্যাম্পাস লাইফ এখানে উপভোগ করা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় যে শুধু পড়াশোনার জায়গা নয়, বরং এর সাথে ক্রীড়া ও সংস্কৃতির যে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ভালোভাবে উপলব্ধি করা যায়। এছাড়াও পড়াশুনার যে কোনো সমস্যায় বড় ভাইয়া আপুরা এগিয়ে আসে। শিক্ষকগণও অনেক সাহায্য করে। শিক্ষকগণ আন্তরিকতার সহিত পড়াগুলো বুঝিয়ে দেয়। সবুজ প্রকৃতির মধ্যে পড়াশুনার একটা ভালো পরিবেশ সৃষ্টি হয়। উৎসবের ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনেক অনেক এগিয়ে। পহেলা বৈশাখ উৎসব, বসন্ত উৎসব, আষাঢ় উৎসব, একুশে ফেব্রুয়ারি উৎসব সহ অনেক উৎসব পালন করে থাকে। এই উৎসব গুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষণার্থী এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে থাকে। দেশের জাতীয় শহীদ মিনার এই বিশ্ববিদ্যালয়েই অবস্থিত। পহেলা বৈশাখে চারুকলা বিভাগের ছাত্রছাত্রীরাসহ অন্যান্য বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা মিলেমিশে দেশের সবচেয়ে বড় মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করে থাকে। এছাড়াও, বার্ষিক ভ্রমন, বিভিন্ন সময়ে কনসার্ট, আন্তঃবিভাগ প্রতিযোগিতা, আন্তঃহল প্রতিযোগিতাসহ অনেক খেলার আয়োজন করে। পাশাপাশি বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনেক অনুষ্ঠান এর ব্যবস্থা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রত্যেক হলেই আছে বিতর্ক ক্লাব। এজন্য এখানে ক্যাম্পাস লাইফটা অনেক মজার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোসাইটি ও ক্লাব
উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের মধ্যে রয়েছে:
প্রপদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র,বাংলাদেশ উদীচি শিল্পীগোষ্ঠী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফিক সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টুরিস্ট সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইটি সোসাইটি (DUITS), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স সোসাইটি (DUSS), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা, বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ, বাংলাদেশ ওপেন সায়েন্স অর্গানাইজেশন, বাঁধন, সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন ইত্যাদি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিস্তম্ভ ও ভাস্কর্য
১. অপরাজেয় বাংলা
স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মরণে নির্মিত,মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ। ১৯৭৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর ১২ ফুট উচ্চতা, ৮ফুট প্রস্থ ও ৬ ফুট ব্যাসের এই ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করা হয়।
২. সন্ত্রাস বিরোধী রাজু স্মারক ভাস্কর্য
টিএসসি তে ১৯৯৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ভাস্কর্যটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। শিল্পী শ্যামল চৌধুরী এটি তৈরি করেন।
৩. শহীদ মিনার
১৯৫২ সালের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে শহীদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধ। ১৪ মিটার লম্বা এই স্তম্ভটি ভাস্কর হামিদুর রহমান তৈরি করেন। ১৯৬৩ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের শহীদ ব্যক্তিত্ব আবুল বরকতের মাতা হাসিনা বেগম কর্তৃক শহীদ মিনারের উদ্বোধন করা হয়। বর্তমানের শহীদ মিনারটি ১৯৭২ সালে পুননির্মাণ করা হয়।
৪. দোয়েল চত্বর
৫. তিন নেতার মাজার
৬. ঢাকা গেইট
৭. স্বাধীনতা সংগ্রাম
৮. ঘৃণাস্তম্ব
৯. স্বোপাজিত স্বাধীনতা
১০. মধুদার ভাস্কর্য
১১. সপ্তশহীদ স্মৃতিস্তম্ভ
১২. শহীদ ড. মিলন ভাস্কর্য
১৩. স্বামী বিবেকানন্দ ভাস্কর্য
১৪. বৌদ্ধ ভাস্কর্য
১৫. শান্তির পায়রা ভাস্কর্য
১৬. মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ
এগুলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পদ্ধতি ও প্রস্তুতি
বিগত বছর গুলোতে যেভাবে প্রশ্ন এসেছিল এবার অর্থাৎ ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে অনেকটা পরিবর্তন হবে প্রশ্নে। এবার থেকে সর্বমোট ১০০ নম্বরের প্রশ্ন হবে। এর মধ্যে ৬০ নম্বর বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও ৪০ নম্বর লিখিত আসবে। পরীক্ষা এর বিষয় গুলা আগের মতোই থাকবে। অর্থাৎ প্রত্যেক ইউনিটে নিজস্ব গ্রুপের বিষয়াবলীর উপর প্রশ্ন হবে। শুধু মানবন্টনটা পরিবর্তন হবে। ঢাবি পরীক্ষায় ভালো পজিশন করতে হলে প্রত্যেকটা বিষয় খুব ভালো করে পড়া লাগবে।কারণ ঢাবির প্রশ্নটা একটু ব্যাসিক লেভেল থেকে করা হয়। খুব অল্প টাইম এর মধ্যে একটা বহুনির্বাচনি করার চেষ্টা করতে হবে। আর লিখিত প্রশ্নের জন্য ছোট ছোট ম্যাথ গুলা প্র্যাকটিস করতে হবে। ভর্তি পরীক্ষায় সময় খুব কম থাকে। তাই ভর্তি যুদ্ধে এগিয়ে থাকতে অল্প সময়ে সমাধান করার চর্চা থাকতে হবে। বাসায় বিগত বছরের প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে প্রস্তুতি যাচাই করতে পারো। পরীক্ষাগুলি ভালো করার চেষ্টা করে যেতে থাকতে হবে। নিজেকে যাচাই করে নিতে হবে ভালোভাবে। এতে আত্মবিশ্বাস বাড়বে। বই গুলার উপরে ভালো দক্ষতা রাখতে হবে। তাহলেই আসা করা যায় তুমি সফল হবে ইনশাআল্লাহ।
শেষ কথা
তোমার স্বপ্ন যদি হয় ৬০০ একরের এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, তবে দেরি না করে এখন থেকেই সেভাবে এগিয়ে যাও। তোমাদের আগমনে ক্যাম্পাস মুখরিত হওয়ার অপেক্ষায় রইলাম। তোমাদের চেষ্টা সফল হোক।
মো: সজিব হোসেন
মনোবিজ্ঞান বিভাগ (৫৪তম ব্যাচ, ২০১৮-১৯)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়